বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:২৬ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

কিয়ামতের দিন তিন ভয়ংকর পাপ

শফিক নোমানী:
কেয়ামতের দিন হবে খুবই ভয়াবহ। এদিন সবাই আতঙ্কগ্রস্ত থাকবে। কেউ কারও দিকে তাকাবে না। সবাই যার যার সমস্যা নিয়ে থাকবে। তখন তিন শ্রেণির মানুষ সবচেয়ে কঠিন অবস্থায় থাকবে। আবু জর গিফারি (রা.) হতে বর্ণিত, হজরত রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, তিন শ্রেণির মানুষের সঙ্গে মহান আল্লাহ কেয়ামতের দিন কথা বলবেন না, তাদের দিকে রহমতের দৃষ্টিতে তাকাবেন না এবং তাদের পবিত্র করবেন না। আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। রাসুল (সা.) এ কথাটি তিনবার বললেন। আবু জর (রা.) জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল, এমন ক্ষতিগ্রস্ত কারা? হজরত রাসুল (সা.) তিন শ্রেণির মানুষ সম্পর্কে বলেন, তারা হলোÑ যারা টাখনুর নিচে কাপড় ঝুলিয়ে রাখে, যারা দান করে দানের কথা বলে খোঁটা দেয় এবং যারা মিথ্যা শপথের মাধ্যমে তার পণ্যসামগ্রী বিক্রয় করে। (আবু দাউদ)

প্রথম প্রকার : যারা টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান করে। পোশাক মানুষের জন্য মহান আল্লাহর দেওয়া একটি নেয়ামত। এর মাধ্যমে মানুষের সৌন্দর্য ও ব্যক্তিত্বের প্রভাব ফুটে ওঠে। পোশাক পরিধানের ক্ষেত্রে শালীনতার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছে ইসলাম। এ বিষয়ে বিভিন্ন বিধি-নিষেধের কথাও জানিয়েছেন রাসুল (সা.)। পায়ের গোড়ালির নিচে কাপড় পরিধান করা বড়ই গুনাহের কাজ। অথচ লোকজন এই বড় গুনাহকেও তুচ্ছজ্ঞান করে সর্বদা তাদের পরনের প্যান্ট, পায়জামা, লুঙ্গি, ট্রাউজার পায়ের গোড়ালির নিচে ঝুলিয়ে রাখে। কারও কারও কাপড় তো আবার মাটিও স্পর্শ করে। পরনের কাপড় গোড়ালির ওপর পরাকে লজ্জাজনক মনে করে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, পরিধানের কাপড় পায়ের গোড়ালির নিচে যে পরিমাণ যাবে, সে পরিমাণ অংশ জাহান্নামে যাবে। (সহিহ বোখারি)

আর যদি কেউ অহংকার করে কাপড় ঝুলিয়ে রাখে তাহলে তার শাস্তি হবে আরও কঠিন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুল (সা.) বলেছেন, মহান আল্লাহ কিয়ামতের দিন সেই ব্যক্তির দিকে দৃষ্টি দেবেন না, যে অহংকার করে তার পরনের বস্তু টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে রাখে। (সহিহ বোখারি)

দ্বিতীয় প্রকার : যারা দান করে খোঁটা দেয়। ইসলামে পরোপকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি ইমানের দাবি এবং মহান আল্লাহর অত্যন্ত পছন্দনীয় কাজ। দান করা আল্লাহর ইবাদতসমূহের অন্যতম একটি ইবাদত এবং সৎকর্মপরায়ণ বান্দার ভালো গুণ। একজন ব্যক্তি কমবেশি ছোট-বড় যা কিছুই সে দান করে তার বিনিময়ে আল্লাহ তাকে উত্তম প্রতিদান দেবেন। আল্লাহতায়ালা এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘যারা আল্লাহর পথে নিজেদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে, অতঃপর যা ব্যয় করে সে জন্য কৃপা প্রকাশ করে না, কষ্টও দেয় না, তাদের জন্য তাদের প্রভুর কাছে পুরস্কার রয়েছে।’ (সুরা বাকারা ২৬২)

এ আয়াতে জানানো হচ্ছে, আল্লাহর পথে ব্যয়ের সুফল লাভের জন্য শর্ত হলো, পরবর্তীকালে সেই দানের জন্য দানগ্রহীতাকে কোনোরূপ খোঁটা না দেওয়া এবং কোনো কষ্ট না দেওয়া। এই আয়াত দ্বারা বোঝা গেল, কেবল দানকালীন ইখলাসই যথেষ্ট নয়, বরং দানের পরও ইখলাস রক্ষা জরুরি। আর খোঁটা দেওয়া ইখলাসের পরিপন্থী। কেননা খোঁটা দেওয়াই হয় পার্থিব প্রত্যাশা পূরণ না হলে।

তৃতীয় প্রকার : যারা মিথ্যা শপথের মাধ্যমে পণ্য বিক্রয় করে। মিথ্যা মানবতাবোধকে লোপ করে নৈতিক চরিত্রের অবক্ষয় ঘটায়। মিথ্যাবাদীর ওপর আল্লাহর অভিশাপ। মিথ্যা বলে বা মিথ্যা শপথ করে পণ্য বিক্রি করার পরিণতি খুবই ভয়াবহ। আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসুল (সা.) একদা কোনো এক খাদ্য ব্যবসায়ীর খাদ্যস্তূপের পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন, তখন তিনি তার হাত ওই খাদ্যের স্তূপে প্রবেশ করান এবং তার হাত ভেজা পান। তখন হজরত রাসুল (সা.) বিক্রেতাকে জিজ্ঞেস করলেন, এটা কী? খাদ্য বিক্রেতা বলল, হে আল্লাহর রাসুল, এটা বৃষ্টিতে ভিজেছে। হজরত রাসুল (সা.) বললেন, কেন তুমি সে খাদ্যগুলোকে ওপরে রাখলে না? যাতে ক্রেতা পণ্যের ত্রুটি দেখে নিতে পারে। অতঃপর হজরত রাসুল (সা.) বললেন, যে প্রতারণা করে সে আমার দলভুক্ত নয়। (সহিহ মুসলিম)

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION